কাজ সহজকরণের কলাকৌশল (পাঠ ৫)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান - গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহসম্পদ | NCTB BOOK
737

আমরা জেনেছি সময় ও শক্তি হচ্ছে খুবই সীমিত দুটো সম্পদ। দুটোর মধ্যে সময় একেবারেই সীমিত, যা সবার জন্য সমান। সময় ও শক্তির উপযুক্ত ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক কাজ সহজে করা যায়।

কাজ সহজকরণ বলতে বোঝায়-

  • নির্দিষ্ট একটা কাজে অল্প সময় ও শক্তি ব্যয় করা।
  • নির্দিষ্ট সময় ও শক্তি ব্যয় করে অধিক কাজ করা।

কাজ সহজিকরণের বিভিন্নরকম কৌশলগুলো আয়ত্ত করে ফেললে কাজগুলো সহজ হয়ে যায় এবং সময় ও শক্তির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হয়। গার্হস্থ্য অর্থনীতিবিদগণ সময় ও শক্তির সদ্ব্যবহার করে কাজ সহজ করার বিভিন্ন কৌশল হিসেবে পাঁচ ধরনের পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো-

১। দেহের অবস্থান ও গতিতে পরিবর্তন কাজ করার সময় দেহের সঠিক অবস্থান ও সঠিক দেহভঙ্গি বজায় রাখলে কম শক্তি ব্যয়ে বেশি কাজ করা যায়। যেকোনো কাজ করার সর্বোচ্চ ও স্বাভাবিক পরিসর সম্পর্কে ধারণা থাকলে কম শক্তি ব্যয়ে কাজটি সহজেই করা যায়। একথা মনে রেখে কাজের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো হাতের নাগালের মধ্যে রাখা। কোনো কিছু কাটার সময় হাতের গতি ওপর থেকে নিচ দিকে থাকলে খুব সহজে কাজটা করা যায়।

২। কাজ করার স্থানের ও কাজের সরঞ্জামের পরিবর্তন- কাজের জন্য স্থান ও সরঞ্জামের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে কাজ সহজ করা যায়। প্রত্যেক কাজের একটা নির্দিষ্ট স্থান থাকে এবং সেখানে কাজটি করতে পারলে সময় ও শক্তির অপচয় রোধ করা যায়। যেমন- রান্নাঘরের পাশে খাবার ঘর থাকলে অথবা রান্নাঘরের একপাশে খাবার খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলে সময় ও শক্তি ব্যয় কমে যাবে। প্রত্যেক কাজের সরঞ্জামগুলো নির্ধারিত স্থানে রাখলে সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায়। বসার টুল, চেয়ার ও টেবিল ইত্যাদি সঠিক উচ্চতায় হলে আরামদায়ক অবস্থায় কাজ করা যায়। সামর্থ্য থাকলে বৈদ্যুতিক ইত্রি, ফিল্টার, প্রেসার কুকার ইত্যাদি ব্যবহার করে সময় ও শক্তি বাঁচানো যায়।

৩। উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ের পরিবর্তন কোনো কিছু উৎপাদন বা প্রস্তুত করার পদ্ধতির বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবর্তন এনে কাজ সহজ করা যায়। যেমন-বাড়ি পরিষ্কার করার সময় বাড়ির প্রতিটি আলাদাভাবে ধোয়ামোছা না করে, প্রথমে সব ঘর ঝাড়ু দিয়ে এরপর ঘরগুলো মুছলে সময় ও শক্তি কম ব্যয় হয়। একইভাবে বুদ্ধিমান গৃহিণী চুলায় ভাত চড়িয়ে দিয়ে সেই সময়ে আরো কিছু কাজ করে নিতে পারেন।

৪। উৎপাদিত দ্রব্যে পরিবর্তন উৎপাদিত দ্রব্যে পরিবর্তন করে কাজ সহজ করা যায়। যেমন- সালাদ বানানোর সময় শসা বা টমেটো মিহিকুচি না করে টুকরা করে কাটলে সময় ও শক্তি কম খরচ হয়। বাজার থেকে কাটা মাছ, স্লাইস করা পাউরুটি কিনে আনা যায়।

৫। কাজে বিভিন্ন উপকরণের পরিবর্তন আজকাল গৃহের কাজ সহজ করার জন্য বিকল্প উপকরণ ব্যবহার
করা হয়। যেমন- জন্মদিন, বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকে ডিসপোজেবল প্লেট, গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করেন। এসব জিনিস একবার ব্যবহার করেই ফেলে দেওয়া হয়, ফলে ধোয়ামোছার জন্য সময় ও শক্তি ব্যয় হয় না। এভাবে বিভিন্ন রকম কৌশল অবলম্বন করে আমরা প্রতিদিনের কাজগুলো সহজভাবে করতে পারি। কাজ করার সবচেয়ে ভালো পন্থাটি বেছে নিলে অল্প সময় ও শক্তিতে অনেক কাজ করা সম্ভব।

কাজ ১- তোমার পরিবারের প্রতিদিনের বিভিন্নরকম কাজ সহজিকরণের কৌশলগুলো চার্টের মাধ্যমে দেখাও।
কাজ ২- তুমি তোমার ঘরটি পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে যেসব সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করো তা উল্লেখ করো।
Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...